মহালছড়ির মাইসছড়িতে পাহাড়ি গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নিন্দা ও প্রতিবাদ|




খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়িতে এক সেটলার কর্তৃক পাহাড়ি গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

আজ শুক্রবার (৩০ মে ২০২৫) হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার  আহ্বায়ক এন্টি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মিঠুন চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, “গতকাল রাত ৯টার সময় ভূক্তভোগী নারী তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় সেটলার মো. আনিসুর রহমান (বদি) সেখানে উপস্থিত হয়ে স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে প্রথমে ওই নারীর কাছ থেকে ৫ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। এরপর ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ভুক্তভোগী নারী প্রতিরোধের চেষ্টা করেন এবং এক পর্যায়ে চিৎকার দেন। এরপর ওই নারীর চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন ছুটে গেলে ধর্ষক আনিসুর রহমান পালিয়ে যায়।”

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য আমরা যখন এলাকাবাসীর সাথে কথা বলি তখন কয়েকজন মুরব্বি আমাদেরকে জানিয়েছেন, “গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আজ সকালে বিজিতলা সেনা ক্যাম্পের জনৈক এক ক্যাপ্টেন মোবাইলে কল করে আমাদেরকে বলেছেন, ‘বিষয়টি তারা দেখবেন, আমরা যেন এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি ও বিষয়টি কাউকে জানাজানি না করি।”

সেনাদের এহেন কার্যকলাপ ধর্ষককে প্রশ্রয় দেয়ার সামিল এবং এটি প্রচলিত আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে নেতৃদ্বয় মন্তব্য করেন।

নেতৃদ্বয় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সারাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কিছুদিন আগে বান্দরবানে এক খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর আগেও কাউখালী, মাটিরাঙ্গা, লক্ষ্মীছড়িতে গণধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছিল। গতকাল মাইসছড়িতে নিজ বাড়িতে কোলে থাকা শিশু সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বাড়ির বাইরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে গৃহবধুকে ধর্ষণ করা হল। পার্বত্য চট্টগ্রামে এসব ঘটনা খুবই ভয়ঙ্কর ও উদ্বেগের। আর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গৃহবধু ধর্ষণের ঘটনাটি প্রচার কিংবা কাউকে জানাজানি না করার জন্য মুরব্বিদেরকে বলাটা আরো বেশি উদ্বেগজনক।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কল্পনা চাকমা অপহরণের ঘটনা থেকে শুরু করে খেয়াং নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা ও যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় বার বার এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

নেতৃদ্বয় অবিলম্বে মাইসছড়িতে গৃহবধৃকে ধর্ষণকারী মো. আনিসুর রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি, পাহাড়ি নারী ধর্ষণের ঘটনায় মেডিকেল রিপোর্টের ওপর জারিকৃত গোপন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।


বার্তা প্রেরক

স্বপন চাকমা

দপ্তর সম্পাদক

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ

খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।


Post a Comment

Previous Post Next Post