রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসিপি’র দুই নেতার ওপর সরকারপন্থী মাস্তানদের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ

 সরকারপন্থী হামলার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালে আহত অবস্থায় দুই পিসিপি নেতা 
নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনপন্থী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর দুই নেতার ওপর সরকারপন্থী পাহাড়ী ছাত্রদের একটি মাস্তানচক্রের অতর্কিত হামলা জখম করায় তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়ে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দোষীদের শাস্তির দাবি করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)

আজ রবিবার (১২ মে ২০২৪) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি জানান এবং উক্ত হামলাকে ন্যাক্কারজনক শিক্ষাঙ্গনে গুণ্ডামি বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন।

বিবৃতিতে পিসিপি নেতৃদ্বয় পাহাড়ি ছাত্রসমাজে বিভেদ হানাহানির মতো কলঙ্কজনক ঘটনার জন্য স্পষ্ট ভাষায় সন্তু লারমাকে দায়ী করেন এবং বলেন, ‘চুক্তি বিরোধীদের হাত-পা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে গলা টিপে হত্যার নির্দেশ (দেখুন : যুগান্তর ১৩ নভেম্বর ২০০০) দেয়ার পর থেকে জেএএস সমর্থিত ছাত্ররা উদ্ধ্যত মারমুখী হয়ে উঠেছে এবং পাহাড়-সমতলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক হামলা জখমের ঘটনা ঘটছে। সাধারণ শিক্ষাথীরাও তাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গতকাল ১১ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনপন্থী পিসিপি কর্মীদের ওপর হামলা উক্ত নির্দেশ বাস্তবায়নের জাজ্জ্বল্য দৃষ্টান্ত। তার দায়ভাগ অবশ্যই সন্তু লারমাকে নিতে হবে।
১৩ নভেম্বর ২০০০ সালে জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমার যুগান্তরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কপি। সাক্ষাৎকারে তিনি ‘চুক্তি বিরোধীদের হাত-পা ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে গলা টিপে হত্যার নির্দেশ’ প্রদান করেন।
বিবৃতিতে পিসিপি নেতৃদ্বয় বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন-হত্যাকাণ্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে ভূমি বেদখল, সীমান্ত সড়কের নামে পাহাড়িদের বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ, প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন সাম্প্রতিক কল্পনা অপহরণ মামলা খারিজের ঘটনায় পার্বত্যবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও সন্তু লারমার মৌনব্রত পালন এবং তার মদদপুষ্ট ছাত্রদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগঠিত করতে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনপন্থী পিসিপি গলদঘর্ম হয়ে নিয়োজিত রয়েছে বলে পিসিপি নেতৃদ্বয় জানান এবং প্রশ্ন রাখেন, শারীরিকভাবে হামলা চালিয়ে জখম করে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার পেছনে শাসকগোষ্ঠীর কৃপালাভের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ছাড়া আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে?’

উল্লেখ্য যে, ১১ মে রাত ৯টার দিকে পিসিপি নেতৃবৃন্দ রিক্সা যোগে শেরে বাংলা হলে যাওয়ার পথে . কুদরাত- কুদা ভবনের পৌঁছলে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা মাস্তান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জীনিচ চাকমা, সুরেন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা, সুমন চাকমা, বিজয় চাকমা, দিব্য চাকমা, সুদীপ্ত চাকমা, লিসেন চাকমার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন ইট, হাতুড়ি ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পিসিপির কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার প্রকাশনার সম্পাদক রোনাল চাকমা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শামিন ত্রিপুরা হাতে শারীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতর জখম হয়। পরে ঘটনাস্থলে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। 

Post a Comment

Previous Post Next Post