আজ রবিবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৩) দুপুর ১২টায় ঢাকায় পুরানা পল্টন মোড়ে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আয়োজিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনী বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ দাবি জানান।
এতে গণগ্রেফতার বন্ধ করা, আটক অবস্থায় নির্যাতন বন্ধ করা, বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত নিপীড়ন বন্ধ করা, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করা হয়।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ) কেন্দ্রীয় সদস্য দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক হেমন্ত দাষ।
সভাপতির বক্তব্যে ফয়জুল হাকিম বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে বাংলাদেশে আজ মানবাধিকার ভুলুন্ঠিত। সভা সমাবেশ মিছিল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে সরকার দেশকে এক পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অবাধ লুণ্ঠনের কারণে আজ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা বিপন্ন করে চলেছে। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় এই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা এই লুণ্ঠন কাজ করতে পারছে।
গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল ও মত দমনে গুম, বিচারবহির্ভুত হত্যা, আটক অবস্থায় নির্যাতন, গণগ্রেফতারের যে পথ বেছে নিয়েছে তা দিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
সমাবেশে অমল ত্রিপুরা বলেন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনেরর ঘটনা ঘটছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রামে '১১ দফা' নির্দেশনা জারি করে পাহাড়ে সেনা শাসনকে বৈধতা দেওয়ার পর সেনাবাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার করে পাহাড়ি জনগণকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, নির্যাতন, হয়রানি, খবরদারি-নজরদারি, অস্ত্র গুঁজে দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ, বিচার বহির্ভুত হত্যা, ধর্ষণ, ভূমি বেদখলেরর মত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সংঘটিত করছে। এ বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৯ জন বিনা কারণে গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন। এছাড়াও রাঙামাটি কারাগারে আটক পাহাড়ি বন্দীরা আদালতের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় সেনা-গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক কারাফটক থেকে তুলে নিয়ে নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে। এটি ২০১৯ সাল থেকে শুরু হলেও তা এখনো চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা ২০১৯ সালে গুমের শিকার হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমাকে লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস গং কর্তৃক অপহরণ করা হয়েছে। আজও তাদের কোন হদিস আমরা পাইনি এবং এসব ঘটনার কোন বিচারও হয়নি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাজারি শোষণের হাত থেকে বাঁচতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলন করেছিলেন।সরকারের পুলিশ গুলি চালিয়ে ৪ জন শ্রমিককে হত্যা করে,শত শত শ্রমিককে আহত করে এই ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করেছে।শ্রমিক হত্যার বিচারের দাবীতে তাই মাঠে নামতে হবে।
দীপা মল্লিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস সাধারণ ছাত্রদের অধিকার কেড়ে নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করেছে।একে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র সমাজকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
হেমন্ত দাষ বলেন, একতরফা নির্বাচন জনগণ মানে না।হাসিনা সরকারের পদত্যাগ,পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়া,নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণকে রাস্তায় নামতে হবে।


إرسال تعليق