রাঙামাটিতে তিন সংগঠনের উদ্যোগে দালাল-বেঈমান বিরোধী প্রতিরোধ মিছিল, কুশপুত্তলিকা দাহ

ছবি: রাঙামাটিতে দালাল-বেঈমানদের কুশপুত্তলিকা দাহ করছেন তিন সংগঠন

রাঙামাটি প্রতিনিধি : রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সামনে দালাল-বেইমান প্রতিরোধ মিছিল, সমাবেশ ও দালাল-বেঈমানদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, রাঙামাটি জেলা শাখা।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর ২০২৩) বেলা ২টার সময় ‘পাহাড়ে বিভেদ ও অশান্তির মূল হোতা সাবেক ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম ও তার সৃষ্ট সেনা চর ও দালালদের মুখোশ উন্মোচন করে লড়াই সংগ্রাম এগিয়ে নিন’ শ্লোগানে একটি মিছিল বের করা হয়। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘বিএনপি-আ্ওয়ামী লীগের দালালরা হুঁশিয়ার সাবধান’ সহ দালাল বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড-ব্যানার বহন করেন। মিছিল শেষে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের গেইটের সামনে তারা সমাবেশ করেন।

সমাবেশে পিসিপি নেতা তনুময় চাকমার সঞ্চালনায় ও পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিপন আলো চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রাঙামাটি জেলা সভাপতি রিনিশা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রাঙামাটি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়তন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা সভাপতি রিমি চাকমা।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দালাল-জাতীয় বেঈমানদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধির পেছনে স্বৈরাচারী এরশাদের শাসনামলে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিস্তর ভূমিকা ছিল। তার মধ্যে কুখ্যাত ছিলেন ১৯৮৭-৮৯ সালে খাগড়াছড়ি সেনা ব্রিগেডের ব্রিগেড কমাণ্ডার সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। সে সময় তিনি পাহাড়িদের মধ্য থেকে সমাজচ্যুত-নীতিভ্রস্তদের নানা প্রলোভনে ফেলে ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দালাল-চর সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভেদ ও অশান্তি সৃষ্টি করেছিলেন। কাউন্টার ইন্সার্জেন্সির নামে তার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের উপর নিপীড়নের স্টিম রোলার চালানো হয়েছিল। এই কুখ্যাত ইব্রাহিম বর্তমানে ‘বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি’ নামে দোকান খূলে বসেছেন। কিন্তু ইদানিং দেশবাসীর কাছে তার দালালি-বেঈমানীর মুখোশ খুলে পড়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কুখ্যাত ইব্রাহিমের সৃষ্টি দালাল-চরদের অবশেষ এখনো রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি’ জাতীয় পার্টির হয়ে এসব দালালদের দৌরাত্ম্য আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব দালালরা নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে এলাকায় এলাকায় এসে জনগণের কাছে ধর্ণা দেয়। তাই এসব দালাল ও জাতীয় বেঈমানদের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে, তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। এলাকায়, সমাজে অবস্থানকারী দালাল-সুবিধাবাদীদের মুখোশ খুলে দিতে হবে।

সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের ন্যায্য দাবি পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন বেগবান করার মাধ্যমে দালাল-বেঈমানদের রুখে দিতে ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা দালাল-বেঈমানদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post