আজ সোমবার (৬ মে ২০২৪) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা, সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক বরুণ চাকমা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে উক্ত ঘটনাকে বিষ্ময়কর ও নজীরবিহীন উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা রক্ষার নামে কারা সন্ত্রাসীদের মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করে তুলছে এ ঘটনা দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
বিবৃতিতে তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘গত ৩ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় বরকল উপজেলার এরিবুনিয়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বেশ কয়েকজন ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীকে আটক করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ একটি ট্রলারে করে বরকল যাচ্ছিল।
‘একজন ঠ্যাঙাড়ে বিজিবি সদস্যদের জানায় যে, তারা সেনাবাহিনীর অনুমতি নিয়ে বরকলে যাচ্ছিল। কিন্তু বিজিবি তাকে “চুপ, একদম চুপ, কেউ কোন কথা বলবে না” বলে ধমক দেয়।”
তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজিবি সদস্যরা অত্যন্ত সাহকিতার সাথে ও ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করলেও, কোন রহস্যজনক কারণে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে তার কোন ব্যাখ্যা বিজিবি কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজও দেয়া হয়নি।’
নেতৃবৃন্দ বিজিবির হাতে আটক ও পরে ছেড়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের কয়েকজনের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলো তিলক চাকমা (মিশর), পিতার নাম সমীরণ চাকমা, গ্রাম- দেওয়ান পাড়া, ভাইবোন ছড়া ইউপি, খাগড়াছড়ি; রূপায়ন চাকমা (উত্তরণ), পিতা- আদে রঞ্জন চাকমা গ্রাম- মাচ্চে পাড়া, বন্দুকভাঙা, রাঙামাটি (বর্তমানে তেঁতুলতলা, খাগড়াছড়ি); জাগরণ চাকমা, গ্রাম- গুইছড়ি, সাপছড়ি ইউপি, রাঙামাটি; প্রবেশ চাকমা (সে সশস্ত্র গ্রুপটির কমাণ্ডার); সবিনয় চাকমা, গ্রাম পানছড়ি, খাগড়াছড়ি।
‘জানা গেছে আসন্ন বরকল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকারি দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব খাটানোর জন্য তারা বরকলে যাচ্ছিল।’
তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কী কারণে এবং কার নির্দেশে অস্ত্রসহ আটকের পরও সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে সদস্যদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে প্রশাসনের কাছে তার কৈফিয়ত দাবি করেন। এছাড়া দায়িদের চিহ্নিত করতে পুরো ঘটনা সরেজমিন তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম প্রেরণের জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ঘটনার পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা পাওয়ার ও প্রকৃত সত্য জানার অধিকার দেশের জনগণের রয়েছে মন্তব্য করে তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই ঠ্যাঙাড়েদের নিয়ে জনগণের সাথে লুকোচুরি খেলা বন্ধ করতে হবে, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলোকে ভেঙে দিতে হবে।

Post a Comment