আজ শহীদ নীতিশ চাকমার ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী

শহীদ নীতিশ চাকমা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

আজ ১৮ এপ্রিল ২০২৪ বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া কলেজ শাখার সক্রিয় কর্মী শহীদ নীতিশ চাকমার (টিটু) ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী তিনি  ১৯৯৩ সালে এই দিনে খাগড়াছড়ি জেলা মহালছড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় ভিডিপি গুলিতে নিহত হন। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ আজ বিশেষ দিনে শহীদ নীতিশ চাকমা (টিটু)-কে শ্রদ্ধা সম্মানের সাথে স্মরণ করছে।

সংগ্রামী নীতিশ চাকমা (টিটু) ১৯৭৬ সাল ১০ই মে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার দুপর্য্যানাল গ্রামে  এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শ্রী সুবাস বসু চাকমা মাতার নাম তৃপ্তি রাণী চাকমা। বাবা-মা দুজনে সৎ নিষ্ঠাবান ধার্মিক এবং সমাজ হিতৈষী ব্যক্তি ছিলেন শহীদ নীতিশ চাকমা এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সকলের জ্যেষ্ঠ।

শৈশবের পাঁচ বৎসর বয়স হতে গ্রামের কেরেঙ্গানাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া শেষ করে ১৯৮৬ সালে মহালছড়ি শহরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৯১ সনে বিজ্ঞান বিভাগ হতে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন এবং সে বৎসর পরীক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে  ‘‘সেন্টার ফাস্টহয়ে কুমিল্লা বোর্ড থেকে বৃত্তি পান। একই বৎসর উচ্চ শিক্ষার জন্য চট্টগ্রাম রাঙ্গুনীয়া কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে দুটি বৎসর পড়া লেখার সাথে সাথে অধিকার হারা পাহাড়িদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষে তিনি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাথে যুক্ত হন এবং পিসিপি রাঙ্গুনিয়া কলেজ শাখার সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

১৮ই এপ্রিল ১৯৯৩ সালে মহালছড়ি বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রের প্রশাসনের দূর্নীতি প্রতিবাদ বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় ভিডিপি সদস্যর গুলিতে প্রাণ হারান শহীদ নীতিশ চাকমা (টিটো) ছাত্রনেতা নীতিশ চাকমা হয়তো চেয়েছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে অঞ্চলের সাধারণ মানুষ অন্ধকার থেকে মুক্ত হবে আলোর পথ দেখাতে পাবে। কিন্তু সরকার নীতিশ তথা পাহাড়ের মানুষের যুক্তিক দাবিকে উপেক্ষা করে ভিডিপি সদস্যদের লেলিয়ে দিয়ে অস্ত্রের বুলেট দিয়ে আঘাত করে নীতিশ চাকমার তাজা প্রাণ কেড়ে নেয়।

আজ বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর হলেও এখনো পর্যন্ত পাহাড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাধারণ মানুষের কাছে বিদ্যুৎতের ছোঁয়া লাগেনি, খাগড়াছড়ি তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্যুৎতের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন দাবিতে মাঝে মাঝে যখন প্রতিবাদ করে, রাজপথে আন্দোলন করতে দেখা যায় তখন স্মরণ করিয়ে দেয় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের অকুতোভয় সৈনিক নীতিশ চাকমার (টিটুর) কথা। মনে করিয়ে দেয় আলোর জন্য আন্দোলন, সংগ্রামের রাজপথে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করা সে সাহসী নীতিশ চাকমার অবদানের কথা

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মনে করে শহীদ নীতিশ চাকমা তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের তখনকার দাবি এখনো প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরবিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের নিকট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে এবং শহীদ নীতিশ চাকমার (টিটু) হত্যাকারী বিডিপি সদস্যদের অবিলম্বে বিচার করতে হবে।

চেতনার মৃত্যুর নেই, বেঁচে থাকে অনন্তকাল

।।শহীদ নীতিশ চাকমা (টিটো) রেড স্যালুট।।

Post a Comment

Previous Post Next Post