![]() |
| ছবি: গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন পিসিপির সভাপতি অঙ্কন চাকমা |
ঢাকা প্রতিনিধি : পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জিইয়ে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা।
আজ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর ২০২৩) বিকাল সাড়ে ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদ ডা: মিলন চত্বরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি উক্ত মন্তব্য করেন।
‘একতরফা তফসিল বাতিল, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, পাহাড়ে সেনাশাসন বন্ধ ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোসহ ৬ দফা দাবিতে এই ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়ের সভাপতিত্বে ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাগিব নাইম, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া।
![]() |
| ছবি: সমাবেশের একাংশ |
সমাবেশ শুরুর আগে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা নিজস্ব সংগঠনের ব্যানার নিয়ে শাহবাগ থেকে শুরু করে রাজু ভাস্কর্য হয়ে একটি মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেয়।
পিসিপি সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি জিইয়ে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের ধোঁয়া তুলে সারাদেশের মানুষকে জিম্মি করে আবারো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এই একতরফা তফসিল প্রত্যাখ্যান করছে।
তিনি আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে তা মোকাবেলা করতে পাহাড় ও সমতলে শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি জনতাকে প্রস্তুত হয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ভয়াবহ দমন-পীড়ন চালিয়ে সমস্ত বিরোধী মতকে থামিয়ে দিতে চায়। রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতির মধ্য দিয়ে জোরপূর্বক ক্ষমতায় আসা একটি ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ জনগণের কাঁধে চেপে আছে। আবারও তারা একই পথ অবলম্বন করে দেশি-বিদেশি মদতে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। যার ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
![]() |
| ছবি: গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে মিছিল নিয়ে সামিল হচ্ছেন পিসিপির নেতা-কর্মীরা |
তারা আরো বলেন, আমলাতন্ত্র, পুলিশ, র্যাব এবং তার গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে এই সরকার টিকে রয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে রাষ্ট্রের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। উন্নয়নের নামে একদিকে বৈদেশিক ঋণ যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে সেই অর্থের একটা বড় অংশ আবার লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এসবের প্রতিবাদ করলে বিরোধী শক্তির ওপর নেমে আসছে ভয়ংকর বিভীষিকা। গুম, খুন, হামলা, মামলায় জনজীবন অতিষ্ঠ। গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর নির্মম আক্রমণ হাসিনা সরকারের বর্বরোচিত শাসনের আরেকটি নিদর্শন। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বহুভাগে বিভক্ত। সরকার মানসম্মত সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারছে না। ক্রমাগত বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষা ব্যয়। শিক্ষার বেসরকারীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতি বেপরোয়া গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। ছাত্র, শিক্ষক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের কোনো মতামত না নিয়েই সরকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
![]() |
| সমাবেশ শেষে মিছিলের ছবি একাংশ |
সমাবেশ থেকে বক্তারা ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কৃষকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল টিএসসি থেকে নীলক্ষেত, কাটাবন, শাহবাগ প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।


.jpg)

إرسال تعليق