সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালুসহ শিক্ষাসংক্রান্ত পাঁচ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
আজ ১১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার
সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি উপজেলা পরিষদ মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি
চেঙ্গী স্কোয়ারে গিয়ে এক সমাবেশে মিলিত হয়। পিসিপি’র খাগড়ছড়ি জেলা শাখার সভাপতি বিপুল চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,
পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, খাগড়াছড়ি কলেজ শাখার সভাপতি কইংজনা মারমা,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উজ্জল চৌধুরী ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা
শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখা চাকমা। খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রজেন্টু চাকমা
সমাবেশ পরিচালনা করেন।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে
খাগড়াছড়ি সদরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,
সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বসবাসরত জাতিসত্তাগুলোর নিজ নিজ মাতৃভাষায় প্রাথমিক
শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ
দেশের সকল জাতিসত্তাসমূহ নিজ নিজ ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ভাষা নিয়ে বেঁচে থাকতে
চায়।
বক্তারা আরো বলেন, মাতৃভাষায়
প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিসত্তার
শিশুরা অধিকাংশই প্রাথমিক লেভেল থেকে ঝড়ে পড়ে যায়। এজন্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মাতৃভাষায়
প্রাথমিক শিক্ষা সহ শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলো। কিন্তু সরকার এখনো
এসব দাবি বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
বক্তারা পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের
ক্ষেত্রে প্রত্যেক জাতিসত্তার মতামতকে প্রাধান্য দেয়া ও অবিলম্বে শিক্ষা সংক্রান্ত
৫ দফা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
এছাড়া সমাবেশ থেকে বক্তারা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার
ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সমাবেশ শেষে মিছিলটি আবারো
উপজেলা পরিষদ মাঠে এসে শেষ হয়।
একই দাবিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা,
পানছড়ি ও মহালছড়ি এবং রাঙামাটি জেলার কাউখালি ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, পিসিপি’র শিক্ষা
সংক্রান্ত পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে : ১.পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রথমিক
শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চত করতে হবে, ২. স্কুল কলেজের পাঠ্যপুস্তকে জাতিসত্তার প্রতি
অবমাননাকর বক্তব্য বাদ দিতে হবে, ৩. পাহাড়ি জাতিসত্তার বীরত্ত্বব্যঞ্জক কাহিনী ও সঠিক
সংগ্রামী ইতিহাস স্কুল কলেজের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, ৪.বাংলাদেশের সকল জাতিসত্তার
সংক্ষিপ্ত সঠিক তথ্য সংবলিত পরিচিতি মূলক রচনা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভূক্ত
করতে হবে ও ৫. পার্বত্য কোটা বাতিল করে পাহাড়িদের বিশেষ কোটা চালু করতে হবে।
বার্তা প্রেরক
বিজয় চাকমা
দপ্তর সম্পাদক
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
Post a Comment